দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্বের প্রভাব

নবম-দশম শ্রেণি (দাখিল) - পদার্থ বিজ্ঞান - পদার্থের অবস্থা ও চাপ (State of matter and pressure) | NCTB BOOK

আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ঘনত্ব একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেটা অনেক সময় আমরা আলাদা করে লক্ষ করি না। যেমন ধরা যাক চুলোতে একটা পাত্রে আমরা যখন পানি গরম করতে দিই, কিছুক্ষণের মাঝেই পানি টগবগ করে ফুটতে থাকে। তার কারণ পাত্রের নিচের অংশে যে পানি থাকে সেটি যখন চুলোর আগুনে উত্তপ্ত হয়ে প্রসারিত হয় তখন তার ঘনত্ব কমে যায়। ঘনত্ব কম বলে সেই পানিটা উপরে উঠে যায় এবং আশেপাশের শীতল পানি নিচে এসে জমা হয়। একটু পর উত্তপ্ত হয়ে সেটাও উপরে উঠে যায় এবং এভাবে চলতেই থাকে এবং কিছুক্ষণেই পানিটা ফুটতে থাকে (এই পদ্ধতিতে পানি কিংবা গ্যাসকে গরম করার পদ্ধতির নাম কনভেকশন বা পরিচলন)। যদি উত্তপ্ত করার পর পানির ঘনত্ব কমে না যেত তাহলে সেটি উপরে উঠে যেত না এবং চুলোর আগুনে শুধু পাত্রের নিচের পানি গরম করতে পারতাম এবং পুরো পাত্রের পানি উত্তপ্ত করা সম্ভব হতো না। 

গ্রীষ্মকালের প্রচণ্ড রোদের মাঝে যারা পুকুরের পানিতে ঝাঁপ দিয়েছ তারা নিশ্চয়ই লক্ষ করেছ পুকুরের উপরের পানিটা উষ্ণ হলেও নিচের পানি শীতল। এখানে তাপটুকু এসেছে উপর থেকে এবং পানি গরম হওয়ার পর ঘনত্ব কমে গিয়ে উপরেই রয়ে গেছে, পুকুরের পুরো পানি সমানভাবে উত্তপ্ত হতে পারেনি। 

বিভিন্ন অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে আমরা বেলুন ওড়াতে দেখেছি। এই বেলুনকে ওড়ানোর জন্য তার ভেতর বাতাস থেকে হালকা কোনো গ্যাস ঢোকাতে হয়। নিরাপত্তার দিক থেকে বিবেচনা করা হলে সেটি নিষ্ক্রিয় হিলিয়াম গ্যাস দিয়ে ভরার কথা কিন্তু হিলিয়াম গ্যাস তুলনামূলকভাবে অনেক ব্যয়বহুল বলে প্রায় সময়েই হাইড্রোজেন গ্যাস দিয়ে কাজ সারা হয়, যেটি যথেষ্ট বিপজ্জনক। শুধু তাই নয়, 

জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত মিথেন গ্যাস বাতাস থেকে হালকা বলে অনেক সময় এই গ্যাস দিয়েও গ্যাস বেলুন তৈরি করে ব্যবহার করা হয়, যেটি সমান বিপজ্জনক। 

আমরা অনেক সময় ফানুস ওড়াতে দেখেছি। এই ফানুসের নিচেও একটা আগুন জ্বালানো হয়, সেটি ফানুসকে আলোকোজ্জ্বল করার সাথে সাথে ভেতরের বাতাসকে উত্তপ্ত করে হালকা করে উপরে নিয়ে যায়। 

একটি ডিম ভালো না পচা সেটা ইচ্ছে করলে পানিতে ডুবিয়ে বের করা যায়। যথেষ্ট পচা হলে ভার ঘনত্ব পানি থেকে কম হবে এবং সেটি পানিতে ভেসে উঠবে। 

Content added || updated By
Promotion